নিজেই নিজের হত্যাকারী (করোনার শিক্ষা) !
এখন আত্ম-মূল্যায়নের সময়......
না কাঁদার কিছুই নেই,এ আমার পাপ….. আমাদের বেসামাল হবার পাপ। শুভ বুদ্ধি অভাবের পাপ। চেতনা নাশের শাস্তি।
আরো পড়তে পারেন
পৃথিবী আজ ভয়ানক এক অসুরের হাতে বন্দী । এর থেকে মুক্তির উপায় খুঁজছে সারা পৃথিবীর সব মুক্তিকামী মানুষ । আমরা সবাই আজ প্রকৃতির খেয়ালের শিকার হয়েছি। অবশ্য প্রকৃতিকে আমরা নিজেরাই ইচ্ছামত ব্যবহার করতে করতে তার এমন ক্ষতি করেছি যে,সে আমাকে,আপনাকে,আমাদেরকে,পৃথিবীর সবাইকে ঘরে বন্দী করতে বাধ্য হয়েছে। আজকে আমাদের এই দুর্দশার পেছনে আমরা নিজেরাই সবচেয়ে বেশি দায়ী। প্রকৃতিকে যতই দোষারোপ করি না কেন,আসলে আমাদের মৃত্যুই আমরা নিজেরাই আমাদের অজান্তে তৈরি করেছি। এতভাবে নষ্ট করছি পৃথিবীর প্রত্যেকটা ধূলিকণা,গাছপালা,প্রাণীকূল সব সব সব …. ।সৃষ্টিকর্তার অপার মমতায় গড়া সেই সৃষ্টির স্রষ্টাকে আমরা না মেনে আমরা কি করেছি…. প্রকৃতিকে করেছি আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী। আমরা আমাদের খেয়াল খুশি মতো যথেচ্ছাচার করে, দুর্বিসহ এমন এক আবাসভূমি তৈরী করেছি যেখানে আমরা নিজেরাই বসবাস করতে পারছিনা।নিঃশ্বাস নিতে গেলে যে জায়গাটুকু দরকার হয় সে জায়গাটুকুও আজ বিষবাষ্পে ভরে গেছে । দিন দিন আমাদের বেপোরোয়া আচারনে তা বিষে ভরে যাচ্ছে বা বলতে গেলে দূষণের এমন এক পাহাড় তৈরী করছি .. । যে খাবার আমরা পরম মমতায় গ্রহণ করি তাও কীটনাশক ভরা,আর এর ফলশ্রুতি হল আজকের এই মহামারী। যেখানে আমরা এই সুন্দর পৃথিবী কে রক্ষা করার চেষ্টার পরিবর্তে নিজেদের লালসাকে এমন ভাবে লালন করছি যাতে ধরা বাধ্য হয়ে আমাদেরকে ঘরে বন্দী করেছে তার ক্ষত সারিয়ে তোলার চেষ্টায়। আসলে প্রকৃতি তার সন্তানকে সবসময় আগলে রাখে প্রকৃতির অপার স্নেহ,ভালোবাসা,মমতা দিয়ে। প্রকৃতির নিবিড় সাহচার্য না থাকলে আমরা একটা দিনও পার করতে পারতাম না । তার ছায়া কোলে আমরা বড় হয়ে উঠেছি,আমরা মানুষ হয়েছি,আমরা খাবার খেয়েছি,আমাদের বিস্তার করেছি,ভবিষ্যতে আমরা কিভাবে থাকবো তারও ব্যবস্থা করেছি। সবই প্রকৃতি সহ্য করেছে। কিন্তু সহ্য করার একটা মাত্র আছে।সে সীমা অতিক্রম হওয়ার জন্যই প্রকৃতি এভাবে আমাদের প্রতি বিরূপ হয়েছে। সবকিছুর অতিক্রমের পর এছাড়া আর কোন কিছু করার ছিলনা বোধহয়। না কাঁদার কিছুই নেই,এ আমার পাপ….. আমাদের বেসামাল হবার পাপ। শুভ বুদ্ধি অভাবের পাপ। চেতনা নাশের শাস্তি।
অথচ খেয়াল করলে দেখবেন একটা সময় ছিল যখন পাখির ডাকে আমাদের ঘুম ভাঙতো,সবাই সূর্য উঠার আগেই তাদের কর্মযজ্ঞ শুরু করত, দুপুরে খনিক বিশ্রাম, বিকালে খেলাধুলা বা শারীরিক কসরত. সূর্য ডোবার পূর্বমুহূর্তে বাড়িতে গমন ,তারপর হাতমুখ ধুয়ে প্রার্থনা সেরে পাঠে মনোনিবেশ করত ,রাত্রে খাওয়ার পর ঘুমাতে যেত, আবার পরের দিন যথারীতি নতুন একটা ভোর।এটাই স্বাভাবিক এবং প্রকৃতি তৈরি স্বতঃস্ফূর্ত প্রক্রিয়া। কিন্তু দিন দিন মানুষ এমন এক সভ্যতার জন্ম দিচ্ছে যেখানে আমরা আমাদের কর্মের একটা বড় অংশ করে থাকি রাত্রে এবং ঘুমিয়ে থাকছি দিনের বেলা ? বারোটা একটা পর্যন্ত। এটা যখন অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে তখনই আমাদের শারীরিক ও মানসিক একটা পরিবর্তন ভেতরে তৈরি হয়ে যাচ্ছে। আমাদের শরীর এমন ভাবে তৈরি,দিনের বেলায় তার সমস্ত গ্রন্থিগুলো জাগ্রত করে আমাদেরকে কর্মের নিযুক্ত করে, আর রাত্রে গ্রন্থিগুলোর নিঃসরণ কমে যায় পরবর্তী দিনের শক্তি সঞ্চয়ের জন্য । এই স্বাভাবিক প্রক্রিয়া থেকে সরে এসে, প্রকৃতি বিরুদ্ধ আচারন করে প্রকৃতিকে হুমকির মুখে ফেলেছি।ফলে ভূপ্রকৃতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।এটা একদিনে তৈরি হয়নি।দীর্ঘ সময়ে আমরা এমন একটা পরিস্থিতিতে পৃথিবীকে এরকম এক অতিমারি আনতে বাধ্য করেছি ! এর ফলশ্রুতিতে আমরা আজ কি দেখছি ?
করোনা নামক মহামারী পুত্র মাকে স্পর্শ করতে পারছেন না! বাবা সন্তানকে রাস্তায় ফেলে দিয়ে চলে যাচ্ছে ! স্ত্রী স্বামীকে আর গ্রহণ করছে না ! অন্য কোথাও পড়ে থাকছে তার মৃতদেহ। আজকের বাস্তবতা এটাই।তবে প্রত্যেকটা মহামারী বা অসুখের একটা ভালো-মন্দ দিক থাকে।
ভালো দিকটা হলো আমাদের প্রকৃতি আবার নতুন করে যেখানে শুধু হিট ,কাঠ ,পাথর ছিল সেখানে ফুল ফুটাছে, পাখি ডাকছে ঢাকা শহরের অলিতে গলিতে, রাস্তার পাশে ফুলের সুবাস পাচ্ছে পথচারীরা। এগুলো মানুষকে নতুন করে আবার জাগিয়ে তুলছে। কিছু মানুষ আছেন যারা মৃত্যুর মুখেও হিন্দুদের দেহ সৎকার করছে, হিন্দু তার জমি দিচ্ছে মুসলিমদের সৎকারের জন্য। এমন সম্প্রীতির বন্ধন হয়তোবা আমরা পূর্বে দেখেনি। ভালবাসার একটা নতুন দিক উন্মোচন হয়েছে মানুষের ভেতর। হিংসা-বিদ্বেষ কমছে। নতুন ভাবে বাঁচার আশা তৈরি হচ্ছে। কিছু মানুষের প্রচেষ্টায় অসহায় মানুষগুলো নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে। এক টুকরো ভালোলাগা এগুলোই আগামী দিনের মানুষকে আত্মমূল্যায়ন এর সুযোগ হয়তো দিবে। নতুন করে অনুভব করবে প্রকৃতির অকৃত্রিম অনুরাগ না থাকলে সুস্থ সুন্দর জীবন পাওয়া সম্ভব নয়। বাঁচতে হলে ভালবাসতে হবে প্রকৃতিকে। তাকে আলিঙ্গন করতে হবে সন্তানের মত। তাকে যত্ন নিতে হবে, তাকে রক্ষা করতে হবে সামনের প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য। আমার অস্তিত্বকে রক্ষা করার প্রয়োজনে প্রকৃতিকেই প্রাণ দিতে হবে। হয়তো আমি বা আপনি থাকবো না, আমাদের অনাগত সন্তান এই আঘাত থেকে, এই মর্মবেদনা থেকে এই শিক্ষাই নিবে সবকিছুর উপরে আমাদের ভালো থাকা, আমাদের সুস্থ থাকা,আমাদের অর্থনীতি, কোন গবেষণা ,কোন শিক্ষা, কোন জ্ঞান আমাদেরকে রক্ষা করতে পারবে না যদি না আমরা প্রকৃতিকে রক্ষা করি । সর্বোপরি পৃথিবী আবার সেরে উঠবে, পৃথিবীর অসুখ আমরা আবার সারিয়ে তুলতে পারব,পৃথিবী আবার শান্ত হবে, চারিদিক অবারিত আলো-বাতাস প্রবাহিত হবে, সবাই সূর্যের আলো পাবে, দখিনা বাতাস প্রাণ ভরে উপভোগ করতে পারবে, একজন মানুষ একজন মানুষের সাথী হবে ভালোবেসে।
তবেই মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার সার্থকতা আসবে।
Visit my channel:-Medha's world
Picture credit:- canva,com
Good post
ReplyDeleteEvolution Netent | casinoland.jp 11bet 11bet starvegad starvegad 754Baccarat Baccarat Baccarat - CHOEGO
ReplyDelete