নির্দিষ্ট কাজের জন্য আমাদের মন হলো সেই কম্পিউটার ।

Imagination is more powerful than creation or work - কল্পনা হল এমন এক শক্তি যাকে সমস্ত সৃষ্টির রাজা বলা হয়। কোন কিছু সৃষ্টির আগে তা কল্পনায়, মানুষের চেতনায় আগে ধরা দেয় বা আসে। এজন্য পৃথিবীর সমস্ত দার্শনিকদের কে বলা হয় সৃষ্টির গর্ভভূমি। তাইতো কল্পিত, অদৃশ্য, অবাস্তব যেকোন চিন্তা বাস্তবতায় রূপান্তরিত হয়েছে। আগামীতেও হবে। সেজন্য কল্পনাকে বা কল্পনাকারী হল সর্বোত্তম মানুষ, উৎকৃষ্ট প্রান। সেভাবে কোন অলীক চিন্তা,মনের খেয়ালে ভেসে ওঠা ধারনা,বিশ্বাস প্রকাশিত হয় বস্তু হিসাবে। এবং বিজ্ঞানীরা সেই কল্পনাকে প্রতিষ্ঠিত করে কল্পনার সত্যতাকে বিশ্ববাসীর কল্যাণে নিবেদন করেছেন। আমাদের এই মনুষ্য নির্মিত সভ্যতা তেমনই এক কল্পনার ফসল বললে অতুক্তি হবেনা। এবং তাই। চিন্তার বিবর্তনের ফল । সেই কল্পনার অতি আধুনিক সংস্করণ থেকে আজ আমরা কম্পিউটার কে পেয়েছি। কম্পিউটার যেন আমাদের দেহের প্রোগ্রামিংয়ের এক অংশ। দেহ যেমন নিদিষ্ট প্রোগ্রামিংয়ে চলে, কম্পিউটারকেও তেমনি কিছু সফটওয়্যার মাধ্যমে ট্রেইন্ড করা হয় বা করার নির্দেশনা সম্বলিত কি কাজ করবে বলা থাকে। একেবারে নিদিষ্ট কিছু করার স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া বা যন্ত্র । বা কিছু কাজ করার নির্দেশনা সম্বলিত কোড ঢুকিয়ে দেওয়া হয় ; তার বাইরে সে কিছুই করতে পারে না। এখানে সে যা জানে না বা তার মধ্যে নেই এমন কিছুকে সে ভয় পায় বা বিপদ মনে করে। তখন সে নিরাপত্তার একটা দেয়াল তৈরী করে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। কারন জন্ম হতে তার মধ্যে যা আছে তার বাইরে সে অন্য কোন কিছু চিন্তা করতে পারে না বা করে না। তাকে সে ভাইরাস হিসাবে চিহ্নিত করে। কেননা তার চিন্তার,বুদ্ধি বিবেচনা করারই কোন ক্ষমতা নাই। মানুষের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনই ঘটে। ছোটবেলা থেকে যেটা সে দেখে সেটাই আস্তে আস্তে শেখে। ছোট থেকে সে কর্মের মাধ্যমে,দেখার শোনার,বলার,স্পর্শের, ভিতর দিয়ে নিজেকে প্রশিক্ষিত করে চেতনে অবচেতনে উভয় ভাবে। যে যত বেশি তথ্য সংগ্রহ করতে পারে বা প্রসেস করতে পারে সে ততো বেশি প্রকৃতিকে পড়তে পারে। প্রকৃতির চাপ সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করে। এরপরও দেখা যায় সে যা চিন্তা করেনি এমন কাজ করার ক্ষেত্রে মন বলে ওঠে তুমি এটা করো না, মস্তিষ্ক না করতে সাড়া দেয়। সেজন্য কোন কাজ করার ক্ষেত্রে আমাদের মন,হৃদয়ে নেতিবাচক চিন্তা করে আমাদেরকে বাধা দেয়। প্রথমে নেতিবাচক চিন্তা আসে। ঠিক কম্পিউটারের ভাইরাসকে ডিটেক্ট করার মত। কেননা মস্তিষ্ক সে কাজ পূর্বে কখনো করেনি, শোনেনি। ওটাতে ওর ভয়। আমাদের মস্তিষ্কের অন্যতম প্রধান একটা কাজ দেহকে সুরক্ষিত প্রদান করা। তাই সবসময় দেহ নিরাপত্তা খোঁজে। দেহকে স্ট্যাবল করা তার বড় কাজ। তাই যেখানে ঝুঁকি আছে সেখানে সে নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে। দেহকে বিপদজনক কাজ থেকে বিরত রাখতে চায়। সহজ কথায় ওর কোডিং এর বাইরে যেকোনো একটিভিটি কে বিপদ মনে করে। এটা আমাদের সবার ভিতর ঘটে। অথচ কোন কর্মের ক্ষেত্রে পূর্বের অভিজ্ঞতা থাকলে মস্তিষ্ক কিন্তু সাড়া দেয় এটা তুমি পারবে, ভয় নেই। তোমার আত্মবিশ্বাস আছে করে জয়ী হওয়ার। তুমি পারবে। পূর্বে পেরেছ। সত্য কথা বলতে কি আমাদের জীবদ্দশাটাই একটা নিদিষ্ট কোডিং এর সমষ্টি। জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত ব্যক্তি কি করবে তা তার জিনোম সিকোয়েন্সে লিপিবদ্ধ করা থাকে। এ ব্যাপারটা অনেকেই বলে থাকেন আমার ভাগ্যে এটা ছিল না। তার মানে সে ওই তত্ত্বকেই প্রতিষ্ঠা দিল।
.........কিন্তু আশার কথা এই যে, মানুষ চিন্তা করতে পারে, মানুষের বুদ্ধিমত্তা আছে। ভালো-মন্দ বিচার করার ক্ষমতা আছে। এখানেই মানুষের স্বতন্ত্রতা অন্য প্রাণী থেকে,অন্য বস্তু থেকে। প্রভেদ এটাই। যেটা কোন জড়বস্তু বা চতুষ্পদ প্রাণীর মধ্যে নাই। কোডিংটা ভেঙে গেলে সে বিনষ্ট হয়ে যায়, হারিয়ে যায় পৃথিবী থেকে। তাই আমাদের প্রথম এবং প্রধান কাজ মন কে নিয়ন্ত্রণ করা। সেজন্য বিপদের সময় শরীরের সাথে যত না যুদ্ধ করতে হয় মনের সাথে যুদ্ধ করতে হয় তার থেকে ঢের বেশি। তাই শরীর যাকে চেনে না তার বিরুদ্ধে নিরন্তর লেগে থাকারাই জয়ী হয়। ধৈর্যশীল,বুদ্ধিমান,মনঃসংযোগকারী যদি ফেল করে তবে সেটা জেনারেটিভ কোড হিসেবে DNA তে যুক্ত হয়। শরীর নতুন কিছু শেখে। এ গভীর সত্য যে আত্মস্থ করতে পেরেছে, তদানুসারে ওয়েব তৈরি করতে পেরেছে,অবিরত কর্মে,মননে,চিন্তায় স্বভাবে পরিনত করতে পেরেছে; সে তার উদ্দেশ্যে সফল। শরীর উৎপন্ন বিদ্যুৎ চুম্বকীয় কম্পন তার স্বপ্নকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে মহাবিশ্বের সমকম্পাঙ্ক আকৃষ্ট করে। .........তাই আমাদের মনকে প্রতিনিয়ত রিপ্রোগ্রামিং করতে হবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যের বা উদ্দেশ্যের কম্পাঙ্ক দিয়ে। নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর মনঃসংযোগই পরিত্রাণের পথ। মুক্তি ও বলা যায়।

No comments

Theme images by konradlew. Powered by Blogger.