পেনশন ও গ্র্যাচুইটির হিসাব বের করবেন যেভাবে!
পেনশন ও গ্র্যাচুইটির হিসাব বের করবেন যেভাবে!
পেনশন শব্দটির নাম শুনলেই বাংলা ব্যান্ড আয়ুব বাচ্চুর পেনশন গানটির কথা মনে পড়ে।তাছাড়া আমরা বিভিন্ন নাটক,সিনেমায় পেনশন উত্তলনের ভোগান্তি দেখেছি।এত কাঠ কয়লা পুড়েও যদি অবশেষে আপনার শেষসম্বল টুকু হাতে সঠিক না পান কেমন লাগবে?তাই আজ আমরা ল্যাম্পগ্রান্ট, গ্র্যাচুইটি ও পেনশনের হিসাব নেয়ে আলোচনা করবো
কিভাবে বের করবেন ল্যাম্পগ্রান্ট, গ্র্যাচুইটি ও পেনশনের হিসাব ?
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ২৩/১২/২০১৩ তারিখে নং-০৭.০০.০০০০.১৭১.১০.০০৬.১৫-১৮১, স্মারকমূলে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকুরিজীবীদের অবসরকালীন সুবিধাদি/প্রাপ্যতা তথা পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ও পেনশনের পরিমান পূণঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
পূর্বেকার পেনশন যোগ্য চাকুরিকাল ১০-২৫ বছরের পরিবর্তে ৫-২৫ বছর এবং পেনশনের হার সর্বশেষ আহরিত মূলবেতনের৮০% এর স্থলে ৯০% -এ উন্নীত করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে চাকুরীকাল ৫ বছর হলেই আপনি পেনশনের আওতায় আসবেন। পূর্বে চাকুরীকাল ১০ বছর না হলে পেনশনের আওতায় আসতো না।
জেনে নিন চাকুরীকাল অনুযায়ী পেনশনের হারঃ
চাকুরীকাল ৫ বছর হলে ২১%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৬ বছর হলে ২৪%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৭ বছর হলে ২৭%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৮ বছর হলে ৩০%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৯ বছর হলে ৩৩% শতাংশ প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ১০ বছর হলে ৩৬%, আগের হার ছিল ৩২%।
চাকুরীকাল ১১ বছর হলে ৩৯%, আগের হার ছিল ৩৫%।
চাকুরীকাল ১২ বছর হলে ৪৩%, আগের হার ছিল ৩৮%।
চাকুরীকাল ১৩ বছর হলে ৪৭%, আগের হার ছিল ৪২%।
চাকুরীকাল ১৪ বছর হলে ৫১%, আগের হার ছিল ৪৫%।
চাকুরীকাল ১৫ বছর হলে ৫৪%, আগের হার ছিল ৫৮%।
চাকুরীকাল ১৬ বছর হলে ৫৭%, আগের হার ছিল ৫১%।
চাকুরীকাল ১৭ বছর হলে ৬৩%, আগের হার ছিল ৫৪%।
চাকুরীকাল ১৮ বছর হলে ৬৫%, আগের হার ছিল ৫৮%।
চাকুরীকাল ১৯ বছর হলে ৬৯%, আগের হার ছিল ৬১%।
চাকুরীকাল ২০ বছর হলে ৭২%, আগের হার ছিল ৬৪%।
চাকুরীকাল ২১ বছর হলে ৭৫%, আগের হার ছিল ৬৭%।
চাকুরীকাল ২২ বছর হলে ৭৯%, আগের হার ছিল ৭০%।
চাকুরীকাল ২৩ বছর হলে ৮৩%, আগের হার ছিল ৭৪%।
চাকুরীকাল ২৪ বছর হলে ৮৭%, আগের হার ছিল ৭৭%।
চাকুরীকাল ২৫ বছর হলে ৯০%, আগের হার ছিল ৮০%।
ক) বাধতামূলকভাবে সমর্পিত আনুতোষিকের হার (টাকায়)
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২৩/১২/২০১৩ তারিখের ০৭.০০.০০০০.১৭১.১৩.০২৭.১৩-১৬০ সংখ্যক স্মারকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক পেনশন সুবিধার আওতাভুক্ত অবসর গ্রহনকারী চাকুরে কিংবা মৃত্যবরণকারী চাকুরের পরিবারের জন্য বাধ্যতামুলক সমর্পিত অর্ধেক(৫০%) গ্রস পেনশনের প্রতি ১(এক) টাকার বিপরীতে আনুতোষিকের হার নিম্নরুপভাবে পূণঃ নির্ধারণ করা হয়েছেঃ
১. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১০ বছরের কম
২৬৫ টাকা (পূর্বে ছিল না।১/৭/২০১৫ হতে পেনশন যোগ্য চাকরিকাল নতুন সংযোজন করা হয়েছে)
২. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১০ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১৫ বছরের কম
২৬০ টাকা (পূর্বের হার ২৩০ টাকা)
৩. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ২০ বছরের কম
২৪৫ টাকা (পূর্বের হার ২১৫ টাকা)
৪. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ২০ বছর বা ততোধিক ২৩০টাকা (পূর্বের হার ২০০ টাকা)
(খ) স্বেচ্ছায় সমর্পিত অবশিষ্ট আনতোষিকঃ
গ্রস পেনশনের অবশিষ্ট অর্ধেক (৫০%) একসাথে সমর্পণকারী অবসরভোগীগণ উপরে বর্নিত হারের অর্ধেক হারে আনুতোষিক প্রাপ্য হতেন।যা ১ জুলাই, ২০১৭ হতে বন্ধ করা হয়েছে।
১) ল্যামগ্রান্ট হিসাব নির্ধারণের পদ্ধতিঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x চাকুরিতে অর্জিত ছুটি (সর্বোচ্চ ১৮ মাস) = মোট টাকা।
২) আনুতোষিক নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ x আনুতোষিকের নির্ধারিত হার = মোট টাকা।
৩) পেনশন নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা।
এবার পেনশন ও গ্রাচুইটি হিসাবের পালাঃ
উদাহরণ-১ জাহিদ সাহেবের জন্ম তারিখ ০১/০৬/১৯৫৮, তিনি ১৪/১২/১৯৯০ খ্রিঃ তারিখে চাকরিতে যোগদান করেছেন।তিনি ০১/০৬/২০১৮ তারিখে অবসর গমন করবেন।তার মূলবেতন ৩৪০১০/- তিনি মোট চাকরি করেছেন ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিন।তিনি বিনাবেতনে কোন ছুটি ভোগ করেননি।তাহলে তার প্রাপ্য আনুতোষিক ও মাসিক পেনশন কত হবে?
১. জাহিদ সাহেব মোট পেনশনের কত শতাংশ পাবেন?
সুত্রটিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা।
সুতরাং তার প্রাপ্য পেনশন = (৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২ টাকা
= ৩০৬০৯ ÷ ২ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ টাকা
২. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন?
সূত্রঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x অর্জিত ছুটি (১৮ মাস) টাকা
সুতরাং ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন = ৩৪০১০ x ১৮ টাকা
= ৬,১২,১৮০ টাকা।
৩. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন আনুতোষিক পাবেন?
সুত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ x বাধ্যতামুলক সমর্পিত অনুতোষিক
সুতরাং-আনুতোষিক [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] x ২৩০
= [৩০৬০৯ ÷ ২] x ২৩০
= ১৫৩০৪.৫ x ২৩০
= ৩৫,২০,০৩৫ টাকা
৪. তিনি প্রতি মাসে কত টাকা পেনশন পাবেন?
সত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ + চিকিৎসা ভাতা
সুতরাং মাসিক পেনশন প্রাপ্য = [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= [৩০৬০৯ ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ + ১৫০০ টাকা
= ১৬৮০৪.৫ টাকা
ব্যাখ্যাঃ ৬৫ বছরের উর্ধ্বে পেনশনারদের মাসিক চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ টাকা (০১/০৭/২০১৬ তারিখ হতে কার্যকর হয়েছে)।
বিঃদ্রঃ পরবর্তীতে চাকরিরত অবস্থায় একজন মৃত্যুবরণকারী ও চাকরিতে স্থায়ীভাবে অক্ষম চাকরিজীবীর পেনশন হিসাব সংযোজন করা হবে।
ব্যাখ্যাঃ
৫ হতে ২৪ বছরের চাকুরিকাল তখনই পেনশনের যোগ্য হবে যখনঃ
১) একজন কর্মচারী মৃত্যুবরণ করলে কিংবা সরকার কর্তৃক গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড দ্বারা (শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যের কারণে) স্থায়ীভাবে অক্ষম (Invalid) ঘোষিত হলে এবং
২) স্থায়ী পদ বিলুপ্তির কারণে চাকুরি হতে ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে।
(অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৪/১০/২০১৫ তারিখের ০৭.০০.০০০০.১৭১.১৩.০০৬.১৫-৮১ সংখ্যক স্মারকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আপগ্রেড করা হয়েছে।)
________________________________________
সরকারি চাকুরীজীবিদের অবসরের পর পেনশন নিয়ে নানা বিরম্বনার কথা আমরা প্রায়ই বিভিন্ন পেপার পত্রিকার মাধ্যমে পেয়ে থাকি। এর কারন কিছুটা আমাদের অজ্ঞতা আর কিছুটা বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে। সামাজিক পরিস্থতি আমরা একদিনে পরিবর্তন করতে পারব না কিন্ত নিজেদের না জানা বিষয়টি আমরা একটু চেষ্টা করলেই জানতে পারি। এতে কেউ যেমন আপনাকে ঠকাতে পারবে না তেমনই আপনি আপনার প্রাপ্যটাও বুঝে পাবেন সঠিকভাবে। আসুন জানার চেষ্টা করি অবসরের পর কিভাবে আপনার পেনশন ,আনুতোষিক ( ) হিসাব করবেন।
পেনশন হিসাব করতে প্রথমেই আপনাকে আপনার চাকুরীর মেয়াদ হিসাব করতে হবে। অর্থা’ চাকুরীতে যোগদানের তারিখ হতে অবসরের তারিখ পর্যন্ত মোট সময়কাল। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে চাকুরী জীবনে আপনি যদি কখন বিনা বেতনে ছুটি ভোগ করেন বা কোন সময়ের জন্য বেতন না পেয়ে থাকেন বা কোন অপরাধে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাসপেন্ড থাকেন যা পরে দোষী প্রমানিত হয় তবে সে সময়টি আপনার চাকুরীর মেয়াদ হতে বাদ দিয়ে আপনার মোট চাকুরীর সময়কাল হিসাব করা হবে। তারপর সে সময়কালকে বিবেচনা করে সরকার নির্ধারিত রেট অনুসারে আপনি শতকরা কতভাগ পেনশন পাবেন তা হিসাব করা হবে। একইভাবে সেই সময়কালকে বিবেচনা করেই আপনার আনুতোষিক হিসাব করা হবে। আরো স্পষ্ট করার জন্য চলুন একটি উদাহরন দিয়ে বোঝান যাক..
উদাহরন: ধরুন মি: ক , যার জন্ম তারিখ ১/৮/১৯৫৩, চাকুরীতে যোগদানের তারিখ ১/০৬/১৯৭৮ এবং অবসর গ্রহনের তারিখ ১/৮/২০০৩ তিনি ১/৮/৮৫ হতে ৩ মাস গড় বেতেনে ছুটিতে এবং ৬ মাস বিনা বেতনে ছুটিতে ছিলেন। তিনি ১/৩/৯৫ তারিখ হতে ৬ মাস অননুমোদিত ছুটিতে ছিলেন এবং কোন বেতন পান নাই। ধরে নেই উনার শেষ আহরিত বেতন ৩০০০০/- টাকা।
যেহেতেু তিনি ৬ মাস বিনা বেতনে ছুটিতে এবং ৬ মাস অননুমোদিত ছুটিতে ছিলেন তাই এ সময়টা উনার মোট চাকুরীকাল হতে বাদ যাবে।
হিসাব: বছর মাস দিন
অবসর ২০০৩ ৮ ১
যোগদান ১৯৭৮ ৬ ১
সময়কাল ২৫ ২ ০
অর্থাৰ উনার মোট চাকুরী কাল ২৫ বছর ২ মাস ১দিন ( যোগদানের ১দিন যোগ করে) কিন্ত উনি মোট ১২ মাস ভিন্ন ভিন্ন কারনে বেতন পান নাই তাই নীট পেনশন যোগ্য চাকুরীর মেয়াদ হিসাব করার জন্য এ সময়কাল বাদ দিতে হবে। নীট পেনশন যোগ্য সময়কাল
হিসাব: বছর মাস দিন
সময়কাল ২৫ ২ ১
বিনাবেতনে ৬ ০
অননুমোদিত ছুটি ৬ ০
নীট পেনশন যোগ্য ২৪ ২ ০
অর্থাৰ উনার নীট পেনশন যোগ্য সময়কাল ২৪ বছর ২ মাস। এখন নিচের টেবিল হতে দেখে নিন ২৪ বছর চাকুরীর জন্য সরকার নির্ধারিত পেনশনের পরিমান কত। ২৪ বছর হলে ২০১৫ গেজেট অনুসারে ৮৭%। তাহলে উনার পেনশন হবে..
হিসাব : শেষ আহরিত বেতন ৩০০০০/- টাকা
মোট পেনশন = ৩০০০০x৮৭/১০০ বা ২৬১০০ টাকা
১/২ অংশ সমর্পণ= ২৬১০০x ১/২ বা ১৩০৫০ টাকা ( অর্ধেক সরকারকে সমর্পণ করতে হয়)
মাসিক পেনশন= ২৬১০০-১৩০৫০=১৩০৫০ টাকা
আনুতোষিক =১৩০৫০ x ২৩০= ৩০০১৫০০ টাকা
( সরকার নির্ধারিত ২০ বছরের উর্দ্ধে চাকুরী করলে ১ টাকা সমান ২৩০ টাকা ধরা হয়। নিচের টেবিলে দেখুন )
এখানে লক্ষ্যনীয় যে তিনি ২৫ বছর চাকুরী করেছেন কিন্ত বিনা বেতনে ছুটি ভোগ বা ভিন্ন কারনে বেতন না পাওয়াতে চাকুরীর মেয়াদ কমে যাওয়াতে উনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেন। ২৫ বছর চাকুরী হলে উনি ৯০% পেনশন পেতেন ।সে কারনে সরকারি চাকুরি বিনা বেতনে ছুটি ভোগ করা বা কোন কারনে বেতন না পেলে ভিষন ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকা উচিৎ।
কিভাবে বের করবেন ল্যাম্পগ্রান্ট, গ্র্যাচুইটি ও পেনশনের হিসাব ?
অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ২৩/১২/২০১৩ তারিখে নং-০৭.০০.০০০০.১৭১.১০.০০৬.১৫-১৮১, স্মারকমূলে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনে সরকারি চাকুরিজীবীদের অবসরকালীন সুবিধাদি/প্রাপ্যতা তথা পেনশনযোগ্য চাকুরিকাল ও পেনশনের পরিমান পূণঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
পূর্বেকার পেনশন যোগ্য চাকুরিকাল ১০-২৫ বছরের পরিবর্তে ৫-২৫ বছর এবং পেনশনের হার সর্বশেষ আহরিত মূলবেতনের৮০% এর স্থলে ৯০% -এ উন্নীত করা হয়েছে। ফলে বর্তমানে চাকুরীকাল ৫ বছর হলেই আপনি পেনশনের আওতায় আসবেন। পূর্বে চাকুরীকাল ১০ বছর না হলে পেনশনের আওতায় আসতো না।
জেনে নিন চাকুরীকাল অনুযায়ী পেনশনের হারঃ
চাকুরীকাল ৫ বছর হলে ২১%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৬ বছর হলে ২৪%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৭ বছর হলে ২৭%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৮ বছর হলে ৩০%, প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ৯ বছর হলে ৩৩% শতাংশ প্রাপ্ত হবেন।
চাকুরীকাল ১০ বছর হলে ৩৬%, আগের হার ছিল ৩২%।
চাকুরীকাল ১১ বছর হলে ৩৯%, আগের হার ছিল ৩৫%।
চাকুরীকাল ১২ বছর হলে ৪৩%, আগের হার ছিল ৩৮%।
চাকুরীকাল ১৩ বছর হলে ৪৭%, আগের হার ছিল ৪২%।
চাকুরীকাল ১৪ বছর হলে ৫১%, আগের হার ছিল ৪৫%।
চাকুরীকাল ১৫ বছর হলে ৫৪%, আগের হার ছিল ৫৮%।
চাকুরীকাল ১৬ বছর হলে ৫৭%, আগের হার ছিল ৫১%।
চাকুরীকাল ১৭ বছর হলে ৬৩%, আগের হার ছিল ৫৪%।
চাকুরীকাল ১৮ বছর হলে ৬৫%, আগের হার ছিল ৫৮%।
চাকুরীকাল ১৯ বছর হলে ৬৯%, আগের হার ছিল ৬১%।
চাকুরীকাল ২০ বছর হলে ৭২%, আগের হার ছিল ৬৪%।
চাকুরীকাল ২১ বছর হলে ৭৫%, আগের হার ছিল ৬৭%।
চাকুরীকাল ২২ বছর হলে ৭৯%, আগের হার ছিল ৭০%।
চাকুরীকাল ২৩ বছর হলে ৮৩%, আগের হার ছিল ৭৪%।
চাকুরীকাল ২৪ বছর হলে ৮৭%, আগের হার ছিল ৭৭%।
চাকুরীকাল ২৫ বছর হলে ৯০%, আগের হার ছিল ৮০%।
ক) বাধতামূলকভাবে সমর্পিত আনুতোষিকের হার (টাকায়)
অর্থ মন্ত্রণালয়ের ২৩/১২/২০১৩ তারিখের ০৭.০০.০০০০.১৭১.১৩.০২৭.১৩-১৬০ সংখ্যক স্মারকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক পেনশন সুবিধার আওতাভুক্ত অবসর গ্রহনকারী চাকুরে কিংবা মৃত্যবরণকারী চাকুরের পরিবারের জন্য বাধ্যতামুলক সমর্পিত অর্ধেক(৫০%) গ্রস পেনশনের প্রতি ১(এক) টাকার বিপরীতে আনুতোষিকের হার নিম্নরুপভাবে পূণঃ নির্ধারণ করা হয়েছেঃ
১. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১০ বছরের কম
২৬৫ টাকা (পূর্বে ছিল না।১/৭/২০১৫ হতে পেনশন যোগ্য চাকরিকাল নতুন সংযোজন করা হয়েছে)
২. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১০ বছর বা ততোধিক কিন্তু ১৫ বছরের কম
২৬০ টাকা (পূর্বের হার ২৩০ টাকা)
৩. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ১৫ বছর বা ততোধিক কিন্তু ২০ বছরের কম
২৪৫ টাকা (পূর্বের হার ২১৫ টাকা)
৪. পেনশনযোগ্য চাকুরীকাল ২০ বছর বা ততোধিক ২৩০টাকা (পূর্বের হার ২০০ টাকা)
(খ) স্বেচ্ছায় সমর্পিত অবশিষ্ট আনতোষিকঃ
গ্রস পেনশনের অবশিষ্ট অর্ধেক (৫০%) একসাথে সমর্পণকারী অবসরভোগীগণ উপরে বর্নিত হারের অর্ধেক হারে আনুতোষিক প্রাপ্য হতেন।যা ১ জুলাই, ২০১৭ হতে বন্ধ করা হয়েছে।
১) ল্যামগ্রান্ট হিসাব নির্ধারণের পদ্ধতিঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x চাকুরিতে অর্জিত ছুটি (সর্বোচ্চ ১৮ মাস) = মোট টাকা।
২) আনুতোষিক নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ x আনুতোষিকের নির্ধারিত হার = মোট টাকা।
৩) পেনশন নির্ধারণের পদ্ধতিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা।
এবার পেনশন ও গ্রাচুইটি হিসাবের পালাঃ
উদাহরণ-১ জাহিদ সাহেবের জন্ম তারিখ ০১/০৬/১৯৫৮, তিনি ১৪/১২/১৯৯০ খ্রিঃ তারিখে চাকরিতে যোগদান করেছেন।তিনি ০১/০৬/২০১৮ তারিখে অবসর গমন করবেন।তার মূলবেতন ৩৪০১০/- তিনি মোট চাকরি করেছেন ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিন।তিনি বিনাবেতনে কোন ছুটি ভোগ করেননি।তাহলে তার প্রাপ্য আনুতোষিক ও মাসিক পেনশন কত হবে?
১. জাহিদ সাহেব মোট পেনশনের কত শতাংশ পাবেন?
সুত্রটিঃ সর্বশেষ মূলবেতন x সর্বমোট চাকুরির জন্য পেনশনের নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা।
সুতরাং তার প্রাপ্য পেনশন = (৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২ টাকা
= ৩০৬০৯ ÷ ২ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ টাকা
২. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন?
সূত্রঃ চাকুরিতে সর্বশেষ মূলবেতন x অর্জিত ছুটি (১৮ মাস) টাকা
সুতরাং ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন = ৩৪০১০ x ১৮ টাকা
= ৬,১২,১৮০ টাকা।
৩. জাহিদ সাহেবে কত টাকা এককালিন আনুতোষিক পাবেন?
সুত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ x বাধ্যতামুলক সমর্পিত অনুতোষিক
সুতরাং-আনুতোষিক [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] x ২৩০
= [৩০৬০৯ ÷ ২] x ২৩০
= ১৫৩০৪.৫ x ২৩০
= ৩৫,২০,০৩৫ টাকা
৪. তিনি প্রতি মাসে কত টাকা পেনশন পাবেন?
সত্রটি হলঃ (বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ + চিকিৎসা ভাতা
সুতরাং মাসিক পেনশন প্রাপ্য = [(৩৪০১০ x ৯০%) ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= [৩০৬০৯ ÷ ২] + ১৫০০ টাকা
= ১৫৩০৪.৫ + ১৫০০ টাকা
= ১৬৮০৪.৫ টাকা
ব্যাখ্যাঃ ৬৫ বছরের উর্ধ্বে পেনশনারদের মাসিক চিকিৎসা ভাতা ২৫০০ টাকা (০১/০৭/২০১৬ তারিখ হতে কার্যকর হয়েছে)।
বিঃদ্রঃ পরবর্তীতে চাকরিরত অবস্থায় একজন মৃত্যুবরণকারী ও চাকরিতে স্থায়ীভাবে অক্ষম চাকরিজীবীর পেনশন হিসাব সংযোজন করা হবে।
ব্যাখ্যাঃ
৫ হতে ২৪ বছরের চাকুরিকাল তখনই পেনশনের যোগ্য হবে যখনঃ
১) একজন কর্মচারী মৃত্যুবরণ করলে কিংবা সরকার কর্তৃক গঠিত মেডিক্যাল বোর্ড দ্বারা (শারীরিক ও মানসিক বৈকল্যের কারণে) স্থায়ীভাবে অক্ষম (Invalid) ঘোষিত হলে এবং
২) স্থায়ী পদ বিলুপ্তির কারণে চাকুরি হতে ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে।
(অর্থ মন্ত্রণালয়ের ১৪/১০/২০১৫ তারিখের ০৭.০০.০০০০.১৭১.১৩.০০৬.১৫-৮১ সংখ্যক স্মারকের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক আপগ্রেড করা হয়েছে।)
________________________________________
সরকারি চাকুরীজীবিদের অবসরের পর পেনশন নিয়ে নানা বিরম্বনার কথা আমরা প্রায়ই বিভিন্ন পেপার পত্রিকার মাধ্যমে পেয়ে থাকি। এর কারন কিছুটা আমাদের অজ্ঞতা আর কিছুটা বিদ্যমান পরিস্থিতির কারণে। সামাজিক পরিস্থতি আমরা একদিনে পরিবর্তন করতে পারব না কিন্ত নিজেদের না জানা বিষয়টি আমরা একটু চেষ্টা করলেই জানতে পারি। এতে কেউ যেমন আপনাকে ঠকাতে পারবে না তেমনই আপনি আপনার প্রাপ্যটাও বুঝে পাবেন সঠিকভাবে। আসুন জানার চেষ্টা করি অবসরের পর কিভাবে আপনার পেনশন ,আনুতোষিক ( ) হিসাব করবেন।
পেনশন হিসাব করতে প্রথমেই আপনাকে আপনার চাকুরীর মেয়াদ হিসাব করতে হবে। অর্থা’ চাকুরীতে যোগদানের তারিখ হতে অবসরের তারিখ পর্যন্ত মোট সময়কাল। এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে চাকুরী জীবনে আপনি যদি কখন বিনা বেতনে ছুটি ভোগ করেন বা কোন সময়ের জন্য বেতন না পেয়ে থাকেন বা কোন অপরাধে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাসপেন্ড থাকেন যা পরে দোষী প্রমানিত হয় তবে সে সময়টি আপনার চাকুরীর মেয়াদ হতে বাদ দিয়ে আপনার মোট চাকুরীর সময়কাল হিসাব করা হবে। তারপর সে সময়কালকে বিবেচনা করে সরকার নির্ধারিত রেট অনুসারে আপনি শতকরা কতভাগ পেনশন পাবেন তা হিসাব করা হবে। একইভাবে সেই সময়কালকে বিবেচনা করেই আপনার আনুতোষিক হিসাব করা হবে। আরো স্পষ্ট করার জন্য চলুন একটি উদাহরন দিয়ে বোঝান যাক..
উদাহরন: ধরুন মি: ক , যার জন্ম তারিখ ১/৮/১৯৫৩, চাকুরীতে যোগদানের তারিখ ১/০৬/১৯৭৮ এবং অবসর গ্রহনের তারিখ ১/৮/২০০৩ তিনি ১/৮/৮৫ হতে ৩ মাস গড় বেতেনে ছুটিতে এবং ৬ মাস বিনা বেতনে ছুটিতে ছিলেন। তিনি ১/৩/৯৫ তারিখ হতে ৬ মাস অননুমোদিত ছুটিতে ছিলেন এবং কোন বেতন পান নাই। ধরে নেই উনার শেষ আহরিত বেতন ৩০০০০/- টাকা।
যেহেতেু তিনি ৬ মাস বিনা বেতনে ছুটিতে এবং ৬ মাস অননুমোদিত ছুটিতে ছিলেন তাই এ সময়টা উনার মোট চাকুরীকাল হতে বাদ যাবে।
হিসাব: বছর মাস দিন
অবসর ২০০৩ ৮ ১
যোগদান ১৯৭৮ ৬ ১
সময়কাল ২৫ ২ ০
অর্থাৰ উনার মোট চাকুরী কাল ২৫ বছর ২ মাস ১দিন ( যোগদানের ১দিন যোগ করে) কিন্ত উনি মোট ১২ মাস ভিন্ন ভিন্ন কারনে বেতন পান নাই তাই নীট পেনশন যোগ্য চাকুরীর মেয়াদ হিসাব করার জন্য এ সময়কাল বাদ দিতে হবে। নীট পেনশন যোগ্য সময়কাল
হিসাব: বছর মাস দিন
সময়কাল ২৫ ২ ১
বিনাবেতনে ৬ ০
অননুমোদিত ছুটি ৬ ০
নীট পেনশন যোগ্য ২৪ ২ ০
অর্থাৰ উনার নীট পেনশন যোগ্য সময়কাল ২৪ বছর ২ মাস। এখন নিচের টেবিল হতে দেখে নিন ২৪ বছর চাকুরীর জন্য সরকার নির্ধারিত পেনশনের পরিমান কত। ২৪ বছর হলে ২০১৫ গেজেট অনুসারে ৮৭%। তাহলে উনার পেনশন হবে..
হিসাব : শেষ আহরিত বেতন ৩০০০০/- টাকা
মোট পেনশন = ৩০০০০x৮৭/১০০ বা ২৬১০০ টাকা
১/২ অংশ সমর্পণ= ২৬১০০x ১/২ বা ১৩০৫০ টাকা ( অর্ধেক সরকারকে সমর্পণ করতে হয়)
মাসিক পেনশন= ২৬১০০-১৩০৫০=১৩০৫০ টাকা
আনুতোষিক =১৩০৫০ x ২৩০= ৩০০১৫০০ টাকা
( সরকার নির্ধারিত ২০ বছরের উর্দ্ধে চাকুরী করলে ১ টাকা সমান ২৩০ টাকা ধরা হয়। নিচের টেবিলে দেখুন )
এখানে লক্ষ্যনীয় যে তিনি ২৫ বছর চাকুরী করেছেন কিন্ত বিনা বেতনে ছুটি ভোগ বা ভিন্ন কারনে বেতন না পাওয়াতে চাকুরীর মেয়াদ কমে যাওয়াতে উনি আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হলেন। ২৫ বছর চাকুরী হলে উনি ৯০% পেনশন পেতেন ।সে কারনে সরকারি চাকুরি বিনা বেতনে ছুটি ভোগ করা বা কোন কারনে বেতন না পেলে ভিষন ক্ষতিগ্রস্থ হতে হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন থাকা উচিৎ।
No comments